জীবনের লক্ষ্যে পৌঁছানোও এভারেস্ট জয়ের সমান: বাবর আলী


বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ মাউন্ট এভারেস্টজয়ী ডা. বাবর আলী বলেছেন, প্রত্যেক মানুষ নিজ নিজ অবস্থান থেকে নিজের জীবনের লক্ষ্যপূরণ করাও এভারেস্ট জয়ের সমান। স্ব স্ব পেশায় এগিয়ে যাওয়া এভারেস্টের দিকে এগিয়ে যাওয়ার সমান।

বুধবার (১২ জুন) বিকেলে ফেনীতে এক সংবর্ধনা অনুষ্ঠানে যোগ দিয়ে তিনি এমন অভিব্যক্তি প্রকাশ করেন। ডিডি ল্যাব নামক ডায়াগনস্টিক সেন্টারের আয়োজনে চিকিৎসকদের পক্ষ থেকে বাবর আলীকে সংবর্ধনা দেওয়া হয়। এসময় এভারেস্ট জয়ের নানা অভিজ্ঞতা শেয়ার করেন তিনি।

ডা. যুবায়ের ইবনে খায়েরের সঞ্চালনায় ডিডি ল্যাবের ভারপ্রাপ্ত চেয়ারম্যান ডা. আবদুল কুদ্দুস সোহাগের সভাপতিত্বে অনুষ্ঠানে চিকিৎসক নেতারা উপস্থিত ছিলেন।

এসময় বিএমএ ফেনী জেলা সভাপতি অধ্যাপক ডা. সাহেদুল ইসলাম কাউছার, সাধারণ সম্পাদক অধ্যাপক ডা. বিমল চন্দ্র দাস, সিভিল সার্জন ডা. মো. শিহাব উদ্দিন রানা, ফেনী সদর উপজেলা স্বাস্থ্য ও পরিবার পরিকল্পনা কর্মকর্তা ডা. এস এস আর মাসুদ রানাসহ বিশেষজ্ঞ চিকিৎসকরা উপস্থিত ছিলেন।

ষষ্ঠ বাংলাদেশি হিসেবে এভারেস্ট জয়ের স্মৃতি তুলে ধরে বাবর আলী বলেন, এভারেস্ট জয়ের নেশা সবার কাছে রোমাঞ্চকর। তবে এর জন্য কঠোর পরিশ্রম ও লক্ষ্যে নিরলস ছুটে চলতে হবে। প্রতিটা মানুষের জীবনে নিজের লক্ষ্য পূরণ করাও এভারেস্ট জয়ের সমান।

বাবর আলী বলেন, স্কুল জীবন থেকে এভারেস্ট জয় আমার কাছে স্বপ্ন ছিল। সে থেকে পাহাড়ে চড়া শুরু। ছাত্রজীবনে দেশের বিভিন্ন জেলায় অবস্থিত পর্বত জয় শুরু করি। হেটে সারাদেশ ভ্রমণের অভিজ্ঞতা রয়েছে আমার। দেশের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ জয় করার পর বিশ্বের সর্বোচ্চ পর্বতশৃঙ্গ এভারেস্ট জয়ের নেশা বাড়তে থাকে। যে কোনো পর্বতারোহীর জন্য এভারেস্ট সর্বোচ্চ স্বপ্নচূড়া। আমার সে স্বপ্ন বাস্তবে ধরা দেয় ২৯ মে। বিশ্বের সর্বোচ্চ চূড়ায় বাংলাদেশের পতাকা উড়াতে পারাটা আমার অর্জনকে হাজার গুন বাড়িয়ে দিয়েছে।

তিনি আরও বলেন, পেশায় একজন চিকিৎসক হলেও আমার মন সবসময় পাহাড়ে পড়ে থাকতো। আয়ের সিংহভাগই আমার ভ্রমণ ও পর্বতারোহণে খরচ হতো। এভারেস্ট মিশনে আমার প্রায় ৪৫ লাখ টাকা খরচ হয়েছে।

এভারেস্টের জয়ের স্মৃতির কথা বলতে গিয়ে বাবর বলেন, এর আগে আমি অসংখ্য পর্বতে আরোহণ করলেও এভারেস্টের অভিজ্ঞতা সম্পূর্ণ ভিন্ন। ১১ বছর পর বাংলাদেশি হিসেবে এ জয় আমার জীবনের সেরা ঘটনা। প্রায় দুই মাসের এ জার্নিতে আমাদের নানা প্রতিকূলতা ডিঙিয়ে যেতে হয়েছে। এভারেস্ট অভিযানে গিয়ে অনেকে মৃত্যুবরণ করেছেন এমন দিনটি মরদেহ আমার চোখে পড়েছে। তার মধ্যে মঙ্গোলিয়ার এক নাগরিকের মরদেহ আমাকে সবচেয়ে বেশি কষ্ট দিয়েছে। তার সঙ্গে আমার ৩/৪ দিন আগেও দেখা হয়েছিল। সে এমনভাবে পড়েছিল যেন সে কারও অপেক্ষায় বসে আছে।

আগামীতে যারা এভারেস্ট জয়ের স্বপ্ন দেখছেন তাদের উদ্দেশ্যে বাবর বলেন, নিজের স্বপ্ন একটু একটু করে এগিয়ে নিতে হবে। শারীরিক মানসিক ও আর্থিকভাবে নিজেকে প্রস্তুত করতে হবে। এর আগে পার্বত্য অঞ্চলের ছোটবড় পাহাড় চড়ার অভিজ্ঞতা নিতে হবে।

আবদুল্লাহ আল-মামুন/এমএএইচ/

পাঠকপ্রিয় অনলাইন নিউজ পোর্টাল জাগোনিউজ২৪.কমে লিখতে পারেন আপনিও। লেখার বিষয় ফিচার, ভ্রমণ, লাইফস্টাইল, ক্যারিয়ার, তথ্যপ্রযুক্তি, কৃষি ও প্রকৃতি। আজই আপনার লেখাটি পাঠিয়ে দিন [email protected] ঠিকানায়।



Source link

Post a Comment

Previous Post Next Post